
নোয়াখালী প্রতিনিধি: অর্থদণ্ড ও ১২ বছর করে কারাদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত হয়েও প্রশাসনের নাকের ডগায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন নোয়াখালীর আল আমিন বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর দুই ডাইরেক্টর আপন দুই ভাই শিবলী মির্জা ও হাসান মির্জা। চেক ডিজঅনার (সিআর) মামলায় আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে জনমনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে গভীর প্রশ্ন ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, শিবলী মির্জা ও হাসান মির্জা পরিচালিত ‘আল আমিন বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ ও ‘আল আমিন সুইটস এন্ড ক্রেকার্স লিমিটেড’ ২০০৩ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের চৌমুহনী শাখা থেকে বিনিয়োগ গ্রহণ শুরু করে। তবে বিনিয়োগ গ্রহণের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকটির পাওনা টাকা পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে।
টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলার পাশাপাশি একাধিক চেক ডিজঅনার (সিআর) মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে নোয়াখালীর আমলী আদালত নং-৩-এ বিচারাধীন ১২টি সিআর মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। মামলাগুলো হলো- সিআর মামলা নং-৩৯০/২১ (২টি), ৩৯১/২১ (২টি), ৩৯৪/২১ (২টি), ৩৯৫/২১ (২টি), ১৫৫/২২ (২টি) এবং ১৫৬/২২ (২টি)।
আদালতের রায়ে প্রত্যেকটি মামলায় দুই ভাই শিবলী মির্জা ও হাসান মির্জার প্রত্যেকের ১ বছর করে মোট ১২ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। পাশাপাশি আদালত তাদের ৩৬.১০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড প্রদানেরও আদেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুসারে সাজাপ্রাপ্ত এই দুই সহোদরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, সাজাপ্রাপ্ত দুই ভাই প্রকাশ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে অংশ নিলেও পুলিশের কর্মকর্তারা রহস্যজনকভাবে তাদেরকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
পুলিশের এমন অবহেলামূলক আচরণে সাধারণ জনগণ চরম হতাশ। তারা বলছেন, আদালতের সুনির্দিষ্ট আদেশ ও সাজা থাকা সত্ত্বেও অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমতে পারে।
সাধারণ জনগণ অবিলম্বে কোর্টের আদেশ পালনে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং সাজাপ্রাপ্ত শিবলী মির্জা ও হাসান মির্জাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনবে বলে জোর দাবি জানিয়েছে।