
নোয়াখালী প্রতনিধি: দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবের নোয়াখালীতে পুনরায় পদায়নের গুঞ্জনে স্থানীয় নাগরিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নোয়াখালী থেকে বদলি হওয়ার পরও তিনি নোয়াখালীতে ফিরতে জোর তদবির চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।তরূ জন্য জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন তিনি।
জানা যায়, নোয়াখালীতে কর্মরত অবস্থায় আহসান হাবিব কাজ না করে টাকা উত্তোলন, প্রকল্পগুলোয় নিম্নমানের ম্যাটারিয়াল সরবরাহ, ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশনবাণিজ্য আত্মীয়স্বজন ও নিজের নামে নামধারি ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ ভাগিয়ে নেয়াসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, আহসান হাবীব বর্তমানে ঠাকুরগাঁয়েওর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে আছেন। সেখান থেকে নোয়াখালী ফিরতে আবারো জোর তদবীর চালাচ্ছেন তিনি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এ প্রকৌশলী নিজ নামে ‘ হাবীবের প্রযোজনায় শেখ মুজিবের আত্মজীবনী পাঠ ‘ নামক একাধিক অনুষ্ঠান করেছেন। ওই সময় আওয়ামী সরকারের একেকবার একেক মন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিতগতভাবে দেখা করে অপকর্ম চালিয়ে যেতেন।
এ ছাড়া তর বিরুদ্ধে পাবনায় কর্মরত অবস্থায় অর্থ লুটপাটে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় নিজের নামে একাধিক আয়কর নম্বর বানিয়েও প্রশাসনের চোখ এড়াতে কুট-কৌশলের আশ্রয় নেন। তবে একটা পর্যায়ে সেসব করে দুর্নীতি দমন কমিশনের জালে আটকা পড়েন। এজন্য পাবনায় দুর্নীতি কমিশন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠাকুরগাঁও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব নতুন কর্মস্থলে গিয়েও কাজ না করে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল প্রদানের অভিযোগ ওঠেছে।
জানা যায়, আহসান হাবিব জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালী জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনকালীন, সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে হাতিয়া উপজেলায় একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এন কে কর্পোরেশন ২ কোটি ৯৯ লাখ ৩১ হাজার ৩৫৫ টাকার কার্যাদেশ পায়।
এ কাজের প্যাকেজে টেস্ট টিউবওয়েল, প্রোডাকশন টিউবওয়েল, ওভারহেড ট্যাংক, পাইপলাইন ও ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কার্যাদেশ ছিল। এ সকল কাজের ব্যয় ধরা ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এন কে কর্পোরেশনকে দিয়ে এ সকল কাজ না করে নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে কাজের সম্পূর্ণ বিল ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রদান করেন।
নোয়াখালীতে জনস্বাস্থ্যের কয়েকজন ঠিকাদার জানান, তিনি নোয়াখালীতে কর্মরত অবস্থায় অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ – সুবিধা দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
প্রকৌশলী আহসান হাবিবকে ফের নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে আসার চেষ্টা ও তদবিরের খবরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন
নোয়াখালীবাসী।
তারা বলছেন, এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যদি ফের নোয়াখালীতে আসে তাহলে এখানে নোয়াখালীর মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে